মোছাঃ শামীমা জাহান শারমিন
থানা রিসোর্স সেন্টার, টংগী, গাজীপুর।
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। শিশুর বিকাশে খেলাধুলা সাহায্য করে। শিশুরাই একদিন হবে সোনার বাংলা গড়ার কারিগর। শারীরিক, মানসিক, সামাজিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের মাধ্যম হলো খেলাধুলা। বিকশিত হতে পরিবেশের গুরুত্ব অপরিসীম। বিদ্যালয় হলো একটি উৎকৃষ্ট মানের মাধ্যম। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানে প্লেয়িং কর্ণার স্থাপনের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। যাতে শিক্ষার্থীরা স্বত:স্ফূর্তভাবে খেলাধুলা করতে পারে। প্রাক-প্রাথমিকে ইচ্ছেমত ও নির্দেশনার খেলা আছে, সেগুলো শিশুরা ক্লাসে খেলে এবং তাতে অনেক আনন্দ পায়। গ্রামীন পরিবেশে প্রত্যেকটা বিদ্যালয়ের সামনে খেলার মাঠ বিদ্যমান, কিন্তু শহরের ক্ষেত্রে অধিকাংশ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে খেলার মাঠ নেই আর মাঠ থাকলেও তা শিক্ষার্থীর ঘনত্ব অনুসারে বেশ ছোট। তাই ইনডোর যেমন, পাজল, লুডু, দাবারা, কেরাম ইত্যাদি চালু রাখা। আউটডোর গেমসগুলোতে শিশুদের অংশগ্রহনে উদ্বুদ্ধকরণ (ফুটবল, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন ইত্যাদি)। আবার আমরা হারিয়ে যাওয়া খেলাগুলো খেলতে সম্যক ধারনা প্রদান এবং তাদের দল গঠন করে দিতে পারি। ধরি, দলের নাম হলো- “হারিয়ে যাওয়া রত্ন খুঁজে আনা। খেলাগুলো হলো- গোল্লাছুট, দাড়িয়াবান্ধা, বউচি, ইচিং বিচিং, ওপেন্টি বায়োস্কোপ, এলন্টি-বেলন্টি, ডাংগুলি ইত্যাদি। শিশুরা নিয়মিত এই খেলাগুলো খেললে বিভিন্ন বিকাশ সম্ভব হবে। আমাদের প্রাথমিকে ক্লাস রুটিন এতটাই টাইট সিডিউলে যে খেলাধুলার জন্য কোন সময় বরাদ্দ নেই। সেখানে শিক্ষকদের মাঝে মাঝে অফ পিরিয়ড থাকলেও শিশুদের জন্য আলাদা অফ পিরিয়ড থাকে না। সাধারণত শীতের বিকেলে খেলাধুলা বান্ধব পরিবেশ থাকে। কিন্তু বিদ্যালয় থেকে বাড়ি ফিরতে শিশুদের সন্ধ্যা হয়ে যায়। তখন আর মাঠে ফিরে খেলাধুলা করা সম্ভব হয় না। এইসব বিবেচনা করার জন্য কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। করোনাকালীন সময়ে শিশুরা বাড়িতে বন্দি ছিলো। তাই মুক্ত আকাশে খোলা মাঠে খেলাধুলা করা থেকে বিরত ছিলো। অনলাইন ক্লাস থাকায় বেশিরভাগ শিশুই মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়ে। বর্তমানে শিশুরা দুষ্টামি বা কান্নাকাটি করলে মায়েরা/অভিভাবকরা মোবাইল দিয়ে দেয়। তারা ইচ্ছেমত ঘন্টার পর ঘন্টা বিভিন্ন গেমস ও খারাপ কিছুর দিকে ধাবিত হচ্ছে। এতে শিশুদের বিকাশ ব্যাহত হচ্ছে এবং বাচ্চাদের কথা না বলার প্রবণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেটা আমাদের জন্য অমঙ্গল বয়ে আনবে। শিশুরা ফুলের মতো সুন্দর। শৈশব-কৈশোরে দুরন্তপনা খেলাধুলা ভবিষ্যৎ নাগরিকদের সুষ্ঠুভাবে গড়ে তুলবে। খেলাধুলা হল শিক্ষার অঙ্গ। শিশুকে পূর্ণতা দিতে খেলাধুলার গুরুত্ব অপরিসীম।